Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মাঘ মাসের কৃষি (পৌষ) ১৪২২

মাঘ মাসের কনকনে শীতের হাওয়া মাঝে মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে যায়। এ সময়টা কৃষির এক ব্যস্ততম সময়।  আর সে জন্যই কিছুটা উষ্ণতার পরশ নিয়ে আবার আপনাদের মাঝে হাজির হচ্ছি আগামী মাসের কৃষি নিয়ে। আসুন আমরা সংক্ষেপে জেনে নেই মাঘ মাসে কৃষিতে আমাদের করণীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো-


বোরো ধান

  • ধানের চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথম কিস্তি, ৩০-৪০ দিন পর দ্বিতীয় কিস্তি এবং ৫০-৫৫ দিন পর শেষ কিস্তি হিসেবে ইউরিয়া সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।
  • চারা রোপণের ৭-১০ দিনের মধ্যে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে পারেন। এতে একরে ৬৫ কেজি গুটি ইউরিয়ার প্রয়োজন হয়।
  • বোরো ধানে নিয়মিত সেচ প্রদান, আগাছা দমন, বালাই ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য পরিচর্যা করতে হবে।
  • রোগ ও পোকা থেকে ধান গাছকে বাঁচাতে সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ, আন্তঃপরিচর্যা, যান্ত্রিক দমন, উপকারী পোকা সংরক্ষণ, ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ধানক্ষেত বালাই মুক্ত করতে পারেন।
  • শেষ উপায় হিসেবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

গম

  • গমের জমিতে যেখানে ঘন চারা রয়েছে তা পাতলা করে দিতে হবে;
  • গম গাছ থেকে যদি শিষ বের হয় বা গম গাছের বয়স ৫৫-৬০ দিন হয় তবে জরুরিভাবে গম ক্ষেতে একটি সেচ দিতে হবে।
  • ভালো ফলনের জন্য দানা গঠনের সময় আরেকবার সেচ দিতে হবে;
  • গম ক্ষেতে ইঁদুর দমনের কাজটি সকলে মিলে একসাথে করতে হবে ।

ভুট্টা

  • ভুট্টা গাছে গোড়ার মাটি তুলে দিতে হবে;
  • গোড়ার মাটির সাথে ইউরিয়া সার ভালো করে মিশিয়ে দিয়ে জমিতে একটি সেচ দিতে হবে;
  • গাছের নিচের দিকের মরা পাতা ভেঙে দিতে হবে;
  • ভুট্টার সাথে সাথী বা মিশ্র ফসলের চাষ করে থাকলে সেগুলোর প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হবে।

আলু

  • আলু ফসলে নাবি ধসা রোগ দমনে স্প্রেয়িং শিডিউল মেনে চলতে হবে;
  • মড়ক রোগ দমনে দেরি না করে ২ গ্রাম ডায়থেন এম ৪৫ অথবা সিকিউর অথবা ইন্ডোফিল প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে;
  • মড়ক লাগা জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে;
  • আলু ফসলে মালচিং, সেচ প্রয়োগ, আগাছা দমনের কাজগুলোও করতে হবে;  
  • আলু  গাছের বয়স ৯০ দিন হলে মাটির  সমান করে গাছ কেটে দিতে হবে এবং ১০ দিন পর আলু তুলে ফেলতে হবে;
  • আলু তোলার পর  ভালো করে শুকিয়ে বাছাই করতে হবে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে;

তুলা

  • তুলা সংগ্রহের কাজ এ মাস থেকেই শুরু করতে হবে।  
  • রৌদ্রময় শুকনা দিনে বীজ তুলা উঠাতে হয়;
  • ভালো তুলা আলাদাভাবে তুলে ৩-৪ বার রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে;
  • ভালো তুলার সাথে যেন খারাপ তুলা (পোকায় খাওয়া, রোগাক্রান্ত) কখনও না মেশে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

ডাল ও তেল ফসল

  • সরিষা, তিসি বেশি পাকলে রোদের তাপে ফেটে গিয়ে বীজ পড়ে যেতে পারে, তাই এগুলো ৮০ ভাগ পাকলেই সংগ্রহের ব্যবস্থা নিতে হবে;
  • ডাল ফসলের ক্ষেত্রে গাছ গোড়াসহ না উঠিয়ে মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি রেখে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। এতে জমির উর্বরতা এবং নাইট্রোজেন সরবরাহ বাড়বে।

শাকসবজি

  • বেশি ফলন পেতে শীতকাল শাকসবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, ওলকপি, শালগম, গাজর, শিম, লাউ, কুমড়া, মটরশুঁটি এসবের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।
  • টমেটো ফসলের মারাত্মক পোকা হলো ফলছিদ্রকারী পোকা। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পুরুষ মথকে ধরে সহজে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ক্ষেত্রে  প্রতি বিঘা জমির জন্য ১৫টি ফাঁদ স্থাপন করতে হবে। সেসাথে ক্ষেতে পতঙ্গভুক পাখি বসার  ব্যবস্থা করতে হবে। আধাভাঙা নিম বীজের নির্যাস (৫০ গ্রাম এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ১২ ঘণ্টা ভেজাতে হবে এবং পরে মিশ্রণটি ভালো করে ছাকতে হবে) ১০ দিন পর পর ২/৩ বার  স্প্রে করে এ পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আক্রমণ তীব্র হলে কুইনালফস গ্রুপের কীটনাশক (দেবীকইন ২৫ ইসি/কিনালাক্স ২৫ ইসি/করোলাক্স ২৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার পরিমাণ মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায়।
  • শীতকালে মাটিতে রস কমে যায় বলে সবজি ক্ষেতে চাহিদামাফিক সেচ দিতে হবে।
  • আগাছা পরিষ্কার, গোড়ায় মাটি তুলে দেয়া, সারের উপরিপ্রয়োগ ও রোগবালাই প্রতিরোধের কাজগুলো নিয়মিত করতে হবে।

গাছপালা

  • শীতে গাছের গোড়ায় নিয়মিত সেচ দিতে হবে;
  • গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হবে এবং আগাছামুক্ত রাখতে হবে;
  • সাধারণত এ সময় আম গাছে মুকুল আসে। গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটরদানার মতো হলে গাছে ২য় বার স্প্রে করতে হবে;
  • এ সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখা যায়। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার আগেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপাল ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ

  • শীতকালে পোল্ট্রিতে অপুষ্টি, রানীক্ষেত, মাইকোপাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা এসব সমস্যা দেখা যায় ;
  • মোরগ-মুরগীর অপুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানে প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন এ, সিডিইকে ও ফলিক এসিড সরবরাহ করতে হবে;
  • শীতের তীব্রতা বেশি হলে পোল্ট্রি শেডে অবশ্যই মোটা চটের পর্দা লাগাতে হবে এবং বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে;  
  • পোল্ট্রি লিটারে অ্যামোনিয়া গ্যাস রোধে ১ বর্গফুট জায়গায় ১ কেজি হারে অ্যামোনিল পাউডার মিশাতে হবে;
  • শীতকালে মোরগ-মুরগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সপ্তাহে দুই দিন খাবারের সাথে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি মিশিয়ে দিতে হবে;
  • উপকূলীয় অঞ্চলে অনেকেই হাঁস পালন করে থাকেন। এ সময় হাঁসের নানা রোগও হয়ে থাকে।  হাঁসের যেসব রোগ হয় সেগুলো হলো- হাঁসের প্লেগ রোগ, কলেরা রোগ এবং বটুলিজম;
  • প্লেগ রোগ প্রতিরোধে ১৮-২১ দিন বয়সে প্রথম মাত্রা এবং প্রথম টিকা দেয়ার পর ৩৬-৪৩ দিন বয়সে দ্বিতীয় মাত্রা পরবর্তী ৪-৫ মাস পরপর একবার ডাক প্লেগ টিকা দিতে হবে;  
  • হাঁসের কলেরা রোগের জন্য ডাক কলেরা টিকা ৪৫-৬০ দিন বয়সে ১ বার, ৬০-৭৫ দিন পর দ্বিতীয় বার এবং পরবর্তী ৪-৫ মাস পর পর টিকা দিতে হবে;
  • গোখামারে শীতকালে মোটা চটের ব্যবস্থা করা খুব জরুরি। নাহলে গাভীগুলো তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে যাবে;
  • এসময় গাভীর যত্নে যেসব বিষয়ে নজর দিতে হবে তাহলো-সঠিক সময়ে খাদ্য প্রদান, গোসল করানো, থাকার স্থান পরিষ্কার করা, খাদ্য সরবরাহের আগে খাদ্য পাত্র পরিষ্কার করা এবং নিয়মিত প্রাণিচিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া;
  • গাভীর খাবারের খরচ কমাতে সবচে ভালো হয় নিজেদের জমিতে গোখাদ্য চাষাবাদ করা।

মৎস্যসম্পদ

  • পুকুরে পানি কমে দূষিত হয়ে যায় বলে শীতকালে মাছের বিশেষ যত্ন নিতে হবে;
  • কার্প ও শিং জাতীয় মাছে ড্রপসি বা উদর ফোলা রোগ দেখা দেয়;
  • মাছের ক্ষত রোগ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ রোগের প্রতিকারে প্রতি কেজি খাদ্যের সাথে ১০০ মিলিগ্রাম টেরামাইসিন বা স্ট্রেপটোমাইসিন পর পর ৭ দিন খাওয়াতে হবে;
  • মাছ চাষ বিষয়ে যে কোনো পরামর্শের জন্য কাছের উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সুপ্রিয় পাঠক, অত্যন্ত সংক্ষেপে মাঘ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজগুলোর উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো। আপনারা আপনাদের অভিজ্ঞতা ও পরিবেশের গ্রহণযোগ্যতার সমন্বয়ে কৃষিকে নিয়ে যেতে পারেন এক আলোকিত ভুবনে। কৃষির যে কোনো সমস্যায় উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করে অথবা কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ নম্বরে কল করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আর আপনাদের মেধা, ঘাম, সচেতনতা এবং আন্তরিকতাই এ দেশের কৃষিকে নিয়ে যাবে সাফল্যের শীর্ষে। সোনালি মাঠ, প্রান্তর, দিগন্ত কৃষির উজ্জ্বল আভায় উদ্ভাসিত হবে। কথা হবে আগামী সংখ্যায়। সবার জন্য শুভ কামনা।

 

কৃষিবিদ মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন*
* তথ্য অফিসার (কৃষি), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon